বাটিশাক

বাটিশাকের চাষ

বাটিশাক বাংলাদেশে অনেকটা নতুন সবজি। বাটিশাক চীন, জাপান ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ব্যাপকভাবে আবাদ হয়ে থাকে। এ সবজির বৈশিষ্ট্য হলো এর পাতার বোঁটা দীর্ঘ, চ্যাপ্টা, সাদা রঙের এবং পাতার ফলক হালকা সবুজ রঙের ও গোলাকৃতি।

বাংলাদেশে শীতকালসহ বছরের যেকোনো সময় বাটিশাক আবাদ করা যায়। তবে শীতকালে ভালো হয়। যেকোনো মাটিতে বাটিশাক চাষ করা যায় তবে দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটি উত্তম।

জাত : বারি বাটিশাক-১, চায়না, চীনাশাক কৃষকের কাছে জনপ্রিয়।

চারা তৈরি : উঁচু বেডে বাটিশাকের চাষ সবচেয়ে ভালো হয়। বেডে সরাসরি বীজ বপন করে অথবা চারা রোপণ করে বাটিশাক চাষ করা যায়। তবে বাটিশাক চাষে চারা রোপণ করা উত্তম। জমি চাষ দেয়ার পর এক মিটার চওড়া বেডে ৬০ সেন্টিমিটার দূরত্বে দু’টি সারি করে সারিতে সরাসরি বীজ বপন করা যেতে পারে। তা ছাড়া বীজতলায় চারা তৈরি করেও বেডে ৩০ সেন্টিমিটার দূরে দূরে চারা লাগানো যায়। চারা রোপণ করলে চারার বয়স ২০ থেকে ২৫ দিন হওয়া উচিত।

বীজ বপন বা চারা রোপণ সময় : সারা বছর তবে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে বপন না করাই ভালো। শীতকালে চাষের জন্য আশ্বিন থেকে অগ্রহায়ণ পর্যন্ত বীজ বোনা যায়।

বীজহার : চারা তৈরি করে নিলে প্রতি শতক জমির জন্য বীজ লাগবে এক গ্রাম ও সরাসরি বীজ বপন করলে প্রতি শতাংশ জমির জন্য বীজ লাগবে পাঁচ গ্রাম। চারা রোপণের জন্য প্রতি শতকে ২২০টি চারা লাগবে। প্রতি ১০ গ্রামে ৯ হাজার ৫০০ বীজ থাকে।

বপন বা রোপণ দূরত্ব : সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ৬০ সেন্টিমিটার ও চারা থেকে চারার দূরত্ব হবে ৩০ সেন্টিমিটার। বীজ গজাতে চার থেকে পাঁচ দিন সময় লাগে।

সার প্রয়োগ : বাটিশাক চাষের জন্য প্রতি শতক জমিতে ৪০ কেজি গোবর, এক কেজি ইউরিয়া, ৬০০ গ্রাম টিএসপি ও ৯০০ গ্রাম এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে। জমি তৈরির সময় শেষ চাষে সম্পূর্ণ গোবর (৪০ কেজি) ও সম্পূর্ণ টিএসপি সার (৬০০ গ্রাম) এবং অর্ধেক ইউরিয়া (৫০০ গ্রাম) ও অর্ধেক এমওপি সার (৪৫০ গ্রাম) জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। ২০ থেকে ২৫ দিন পরে বাকি অর্ধেক ইউরিয়া (৫০০ গ্রাম) ও এমওপি সার (৪৫০ গ্রাম) জমিতে উপরিপ্রয়োগ করে মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে।

পরিচর্যা : নিয়মিত সেচ ও প্রয়োজনে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। নিড়ানি দিয়ে ক্ষেত আগাছামুক্ত রাখতে হবে। রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা দিলে সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।

ফসল তোলা ও ফলন : ফুল ধরার আগে ফসল সংগ্রহ করতে হবে। গাছ একবারে সংগ্রহ না করে নিচ থেকে একটি একটি করে পাতা ধীরে ধীরে তোলা যেতে পারে। বপনের পর ৬০ থেকে ৬৫ দিন পরে অথবা রোপণের ৪০ থেকে ৪৫ দিন পরে ফসল তোলা যেতে পারে। ফলন প্রতি শতকে ৭০ থেকে ৮০ কেজি।
লেখক: মৃত্যুঞ্জয় রায়
এগ্রোবাংলা ডটকম
সুলভে কৃষি পন্য ক্রয়ে আস্থা রাখুন বাংলাদেশের প্রথম কৃষি ভিত্তিক ইকমার্স ‘এগ্রোবাংলা শপ’ এ।