তথ্য-প্রযুক্তি ও কৃষি

তথ্য-প্রযুক্তি ও কৃষি

বর্তমান বিশ্ব তথ্য-প্রযুক্তির বিশ্ব। জীবন উন্নয়ন ও টেকসই বিশ্ব গড়তে তথ্য প্রযুক্তির সেবা আবশ্যক। বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষি নির্ভর। সে কারণে গ্রামীণ জনগোষ্ঠির জীবনযাত্রা উন্নয়নে তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক ই-কৃষি এনে দিতে পারে নতুন সম্ভাবনা। কৃষকের চাহিদা মাফিক, সঠিক সময়োপযোগী ও আধুনিক তথ্য, বাজারজাতকরণ, সংরক্ষণ প্রযুক্তি ইন্টারনেট, মোবাইল -এর মাধ্যমে সরবরাহ করলে তা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং কৃষকের ভাগ্যোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

কৃষি তথ্য প্রযুক্তি কেন?
পরিবর্তিত জলবায়ু ও বাজার অর্থনীতির প্রভাবে কৃষি এখন বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। আন্তর্জাতিক বাজারনীতি, অর্থনীতি, বিপণন অবকাঠামো, জীব-বৈচিত্রের পরিবর্তন কৃষিকে সত্যিকার অর্থেই হুমকির মুখে পড়েছে।
কৃষিক্ষেত্রে বিরাজমান সমস্যা হচ্ছে গ্রামীণ পর্যায়ে কোন তথ্য কেন্দ্র নেই। কৃষকবান্ধব তথ্য-প্রযুক্তির ডিজিটাইজেশন অপ্রতুল। কৃষক সংগঠন ও সমবায় ব্যবস্থার অভাব। বাজার অবকাঠামো ও বিপণন ব্যবস্থার সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থাপনার অভাব। উৎপাদক ও ভোক্তাবান্ধব কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়ন অসম।

কৃষিঋণ ও কৃষি ভর্তূকির সরকারি তথ্য সরবরাহ সমপ্রচার অপর্যাপ্ত। সময়োপযোগী ও চাহিদাভিত্তিক তথ্যের বিস্তার কম।

এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধান ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ই-কৃষির ব্যবহার আনতে পারে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য।

তথ্য প্রযুক্তির বাস্ত-বায়নের কৌশল

ই-কৃষি:
জাতীয় কৃষি নীতিতে ই-কৃষি অন্তর্ভূক্তকরণ। ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষি তথ্য কেন্দ্র সমপ্রসারণ। কৃষি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আইসিটি বিষয়ে উৎসাহী ও প্রশিক্ষিতকরণ। কৃষকবান্ধব ই-কৃষি কনটেন্ট তৈরি ও ব্যবহার। কৃষি ভিত্তিক ওয়েবসাইট, ওয়েব টিভি, ওয়েব বেতার চালু করা। কমিউনিটি বেতার চালুকরণ। পূণার্ঙ্গ কৃষি চ্যানেল প্রতিষ্ঠা ও সমপ্রচার। টেরিস্ট্রিয়াল ও স্যাটেলাইট চ্যানেলে কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠানের সমপ্রচার সময় বৃদ্ধি।

কমিউনিটি পর্যায়ে কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র স্থাপন:
আধুনিক কৃষি তথ্য সেবা প্রদানের জন্য কমিউনিটি পর্যায়ে ওয়ানস্টপ সার্ভিসের আদলে কৃষিভিত্তিক যাবতীয় তথ্য প্রদানের ব্যবস্থা করা। আর এ তথ্য কেন্দ্র থেকে গ্রামীণ জনগোষ্ঠি পেতে পারে কৃষি, মৎস্য, পশুসম্পদ এবং সরকারে নীতি বাস্তবায়ন কৌশলসহ স্বাস্থ্য, বাজারদর, কৃষি বিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র। তাছাড়া কৃষি বিষয়ক মুদ্রণ সামগ্রী- বুকলেট, লিফলেট, ও প্রশিক্ষণ সুবিধা এবং ফোন ইন প্রোগ্রামের সুবিধা।

কমিউনিটি বেতার:
রেডিও ছোট, সহজে বহনযোগ্য ও দামেও সস্তা। সেদিক দিয়ে এটি বেশ সহজলভ্য। কমিউনিটি উন্নয়ন কনসেপ্টকে ব্যবহার করে কমিউনিটি বেতার এর মাধ্যমে সুবিধা বঞ্চিত এলাকার জনগণের চাহিদামাফিক তথ্য সরবরাহ করা সম্ভব। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এলাকাভিত্তিক লাগসই ও টেকসই কৃষিপ্রযুক্তি সমপ্রসারণ ও স্থানীয় উন্নয়নের মাত্রিক পরিবর্তন আনয়ন করা সম্ভব।

কৃষি সেবা লাইন/ ফোন ইন সুবিধা:
বর্তমানে মুঠোফোনের জোয়ারে ভাসছে এদেশ। সেই মুঠোফোন হতে পারে কৃষির একটি হেল্প লাইন। এতে ইন্টার অ্যাকটিভ ভয়েস রেকর্ড, মেসেজ, বিশেষজ্ঞ পরামর্শ ও বিরূপ আবহাওয়ায় করণীয় বার্তা প্রদান এনে দিতে পারে কৃষিষেত্রে তাৎক্ষণিক গতি ও সাফল্য।

তথ্য-প্রযুক্তির অফুরন- ভাণ্ডার থেকে ই-কৃষির সফল বাস-বায়ন খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং কৃষি ও কৃষকের ভাগ্যোন্নয়নের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে এগিয়ে নিবে অনেক দূর।
সুলভে কৃষি পন্য ক্রয়ে আস্থা রাখুন বাংলাদেশের প্রথম কৃষি ভিত্তিক ইকমার্স ‘এগ্রোবাংলা শপ’ এ।